স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী কর্নার

 

১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ মধ্যরাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ঘুমন্ত নিরস্ত্র বাঙালির ওপর আধুনিক যুদ্ধাস্ত্র নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল৷ বাংলাদেশিদের স্বাধীকার আন্দোলন, এমনকি জাতীয় নির্বাচনের ফলাফলের আইনসঙ্গত অধিকারকেও রক্তের বন্যায় ডুবিয়ে দিতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী শুরু করেছিল সারাদেশে গণহত্যা৷ সেইরাতে হানাদাররা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হল, ইকবাল হল, রোকেয়া হল, শিক্ষকদের বাসা, পিলখানার ইপিআর সদরদপ্তর, রাজারবাগ পুলিশ লাইনে একযোগে নৃশংস হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে হত্যা করে অগণিত নিরস্ত্র দেশপ্রেমিক ও দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের৷ পাকহানাদার বাহিনী বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় একাধিক গণকবর খুঁড়ে সেখানে শত শত লাশ মাটি চাপা দিয়ে তার ওপর বুলডোজার চালায়৷ নগরীর বিভিন্ন স্থানে সারারাত ধরে হাজার হাজার লাশ মাটি চাপা দেয়া হয়৷ পুরানো ঢাকার বুড়িগঙ্গায় ভাসিয়ে দেয়া হয় নিহতদের লাশ৷  অবস্থান নেয় শহরের চারিদিকে। ১৯৭১ সালে তদানীন্তন জাতীয় পরিষদের সংখ্যাগরিষ্ঠ রাজনৈতিক দল আওয়ামীলীগের নেতা ও বাঙ্গালির গণতান্ত্রিক সংগ্রামের চিরকালের সাহসী মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চ রের্সকোর্স ময়দানে ‘এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’ এবং ‘ঘরে ঘরে দূর্গ গড়ে তোলো’ বলে ঐতিহাসিক ও দিক নির্দেশনাপূর্ণ ভাষণের প্রেক্ষিতে দেশের অন্যান্য স্থানের মত প্রায় সকল মানুষ প্রতিবাদী হয়ে ওঠে।  ছাত্র-জনতা একতাবদ্ধহয়ে মারমুখি হয়ে ওঠে। শত্রুর বিরুদ্ধে ৩ মার্চ বিকালে ঢাকা থেকে আগত সামসুল হক (এম.এন.এ-মঠবাড়ীয়া) আগে ২মার্চ ছাত্র ইউনিয়ন(মতিয়া) শহরে বাঁশের লাঠি ও ডামি রাইফেল নিয়ে সদর রাস্তায় সকাল দিকে সুশৃঙ্খল মহড়া প্রদর্শন করলে পথচারী জনসাধারণ করতালি দিয়ে তাঁদের অভিনন্দন জানায়। ছাত্রলীগ নেতা ওমর ফারুক ২৩ মার্চ শত শত জনতার উপস্থিতিতে স্থানীয় টাউন হল মাঠের শহীদ মিনারে বাংলাদেশের মানচিত্র খচিত পতাকা উড়িয়ে দেন। ২৫ মার্চ দিবাগত রাতে বরিশাল থেকে নূরুল ইসলাম মঞ্জুর টেলিফোনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতা ঘোষণা পাঠান। 

‘তোমাদের এই ঋণ কোনোদিন শোধ হবে না’

মুক্তিযুদ্ধের পটভূমি

১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি ভাষার জন্য আন্দোলনরত ছাত্রদের বুকে গুলি চালানো হয়৷ রফিক, সালাম, বরকতসহ অনেকে এদিন শহিদ হন৷ সেই তার সঙ্গে সঙ্গেই রচিত হয় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পটভূমি৷

২৬শে মার্চ, মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস৷ লাখো শহিদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে এই স্বাধীনতা, এই দিনে জাতি স্মরণ করছে বীর শহিদদের৷ স্বাধীনতা দিবস তাই বাংলাদেশের মানুষের কাছে মুক্তির প্রতিজ্ঞায় উদ্দীপ্ত হওয়ার ইতিহাস৷